ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতির প্রকারভেদ, তাদের বৈশিষ্ট এবং সুবিধা ও অসুবিধা
ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি
যে পদ্ধতিতে ডেটা প্রেরক যন্ত্র হতে গ্রাহক যন্ত্রে স্থানান্তর বা ট্রান্সমিশন হয় তাকে ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড বলে।
ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি |
ডেটা ট্রান্সমিশনের শ্রেণীবিভাগ
ডেটা ট্রান্সমিশন সাধারনত: দুই প্রকার।
Serial and Parallel Transmission |
প্যারালাল ট্রান্সমিশন
যে ডেটাট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে কাছাকাছি অবস্থিত ডিভাইসগুলার মধ্যে একটি ক্যারেক্টারের সবগুলি বিট অর্থাৎ ৮বিট ৮টি লাইনের মধ্য দিয়ে একই সাথে একটি মাত্র ক্লক পালসে সমান্তরালভাবে স্থানান্তরিত হয় তাকে প্যারালাল ট্রান্সমিশন বলে। যেমন USB পোর্ট।
সিরিয়াল ট্রান্সমিশন
যে ডেটাট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে একটি ক্যারেক্টারের সবগুলি বিট অর্থাৎ ৮বিট ১টি লাইনের মধ্যদিয়ে সিরিয়ালি বা ধারাবাহিকভাবে যে কোন দুরত্বে অবস্থিত ডিভাইসগুলির মধ্যে স্থানান্তরিত হয় তাকে সিরিয়াল ট্রান্সমিশন পদ্ধতি বলে।
বিট সিনক্রোনাইজেশন
কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে না পারলে গ্রহিতা কম্পিউটার সেই সিগনাল থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার করতে পারে না।সিগনাল পাঠানোর সময় বিভিন্ন বিটের সমন্বয়ের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতিকে বলা হয় বিট সিনক্রোনাইজেশন।
বিট সিনক্রোনাইজেশনের উপর ভিত্তি করে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি আবার তিন প্রকার। যথা
১) এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি
২) সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি
৩) আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি
Three Types of Data Transmission |
এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি
যে ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে প্রেরক কম্পিউটার হতে গ্রাহক কম্পিউটারে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার (অক্ষর বাই অক্ষর)ডেটা স্থানান্তর করা হয় তাকে এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে।
এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি ব্যখ্যা
এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ডেটা ট্রান্সমিশনের প্রধান বৈশিষ্ট হলো- ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার (অক্ষর বাই অক্ষর)ডেটা স্থানান্তর, ক্যারেক্টার গুলির মাঝখানের বিরতির সময় সমান হয় না। ক্যারেক্টারগুলি সরাসরি স্থানান্তরিত তাই কোনো প্রাথমিক স্টোরেজ লাগে না, প্রতিটি ক্যারেক্টারের শুরুতে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি অথবা দু’টি স্টপ বিট থাকে। দক্ষতা কম।
এসিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা
১.এসিনক্রোনাস পদ্ধতিতে প্রেরক যে কোন সময় সরাসরি ডেটা স্থানান্তর করতে পারে এবং গ্রাহক তা গ্রহণ করতে পারে। এ জন্য এ পদ্ধতিতে কোন প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না। প্রতিটি ক্যারেক্টারের শুরুতে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি অথবা দু’টি স্টপ বিট থাকে।
২. এ পদ্ধতিতে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্যারেক্টারের মধ্যবর্তী বিরতির সময় সমান হয় না।
৩. এসিনক্রোনাস পদ্ধতি বাস্তবায়নে খরচ কম হয়।
৪. কম ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এবং কম দুরত্বে ডেটা প্রেরণর ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বেশি উপযোগী।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের অসুবিধা
১. দ্রুত গতিতে ডেটা স্থানান্তর করতে পারে না এবং এ পদ্ধতিতের ডেটা স্থানান্তর দক্ষতাও কম যা ৭২.৭২% ।
২.মাইক্রোওয়েভ ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে ডেটা কমিউনিকেশন বন্ধ থাকলে মাধ্যমটি অব্যবহৃত অবস্থায় থাকে।
ক্লাউড কম্পিউটিং বলতে বুঝি
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার
১. কী-বোর্ড থেকে কম্পিউটার।
২. কম্পিউটার থেকে প্রিন্টার।
৩. কম্পিউটার থেকে পাঞ্চ কার্ড ও পাঞ্চ কার্ড থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি
যে ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতেক্যারেক্টার সমূহকে ৮০ থেকে ১৩২ টি করে ক্যারেক্টারের একেকটি ব্লক আকারে ভাগ করে কোনো প্রাথমিক স্টোরেজে সংরক্ষণ করে তারপর সমান বিরতিতে একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয় তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা
১. ৮০ থেকে ১৩২ ক্যারেক্টারের একেকটি ব্লক তৈরি করে একটি প্রাথমিক স্টোরেজে রেখে সমান বিরতিতে ব্লক বাই ব্লক ডেটা স্থানান্তর করে
২.প্রতিটি ব্লকের শুরুতে হেডার এবং শেষে টেইলর ইনফরমেশন সংযুক্ত করা হয়।
৩. এ পদ্ধতির ডেটা ট্রান্সমিশন দক্ষতা ৯৫.২৪% যা এসিনক্রোনাসের চেয়ে বেশি।
৪.লং ডিসটেন্স কমিউনিকেশনের জন্য এবং ঐরময ঠড়ষঁসব ডেটা স্থানান্তর করার জন্য বেশি উপযোগী।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের অসুবিধা
১.এ পদ্ধতিতে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইস প্রয়োজন হয়।
২. তুলনামূলক অনেক বেশি হেডার ইনফরমেশন যুক্ত করতে হয়। এবং এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন অপেক্ষাকৃত ব্যয়বহুল।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার
১.ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
২.একাধিক কম্পিউটারের মধ্যে একসাথে সবার ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি
আইসোক্রোনাস পদ্ধতিতে ডেটা ব্লক আকারে ট্রান্সমিট হয় এবং ব্লকগুলির মাঝে কোনো বিরতি থাকে না তাই কোনো প্রাথমিক স্টোরেজ লাগে না। সরাসরি সম্প্রচারের (Live Telecast) ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন হলো এসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস পদ্ধতির মিশ্র সংস্করণ, যা রিয়েল টাইম ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
আইসোক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা
বিরতিহীন ও দ্রুতগতিতে অধিক পরিমান ডেটা স্থানান্ত করতে পারে। এ পদ্ধতি পর পর দুটি ব্লকের মধ্যবর্তী সময় শূন্য হয়।
আইসোক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমি অসুবিধা
এ পদ্ধতি স্থাপনের ডিভাইস ব্যয়বহুল।
আইসোক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার
রিয়েল টাইম ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে অর্থাৎ সরাসরি সম্প্রচারের (Live Telecast) ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। ভিডিও কনফারেন্সিং-এর ক্ষেত্রেও এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
এসিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশন ও সিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশনের মধ্যে পার্থক্য
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন | সিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশন |
১.এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে ডেটা ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট করা হয়। | ১.সিনক্রোনাসট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে ক্যারেক্টার সমূহকে ৮০ থেকে ১৩২ ক্যারেক্টারের একেকটি ব্লক আকারে ভাগ করে কোনো প্রাথমিক স্টোরেজে সংরক্ষণ করে তারপর সমান বিরতিতে একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয়। |
২.এ পদ্ধতিতে প্রতি ক্যারেক্টারের শুরুতে একটি Start এবং শেষে একটি অথবা দুটি stop bit থাকে।
| ২.এ পদ্ধতিতে প্রতিটি ব্লকের শুরুতে ডেটার হেডার ইনফরমেশন থাকে এবং শেষে একটি টেইলার ইনফরমেশন থাকে।
|
৩.এ পদ্ধতিতে ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য প্রেরকের কোন প্রাথমিক স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না। | ৩.এ পদ্ধতিতে প্রেরক স্টেশন প্রথমে ডেটাকে প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসে সংরক্ষণ করে তারপর ব্লক আকারে প্রেরণ করা হয়।
|
৪. ক্যারেক্টারগুলি স্থানান্তরের মধ্যবর্তী বিরতির সময় সমান নয়।
| ৪.এ পদ্ধতিতে প্রতি ব্লকের মাঝখানের বিরতির সময় সমান থাকে।
|
৫.এ পদ্ধতিতে ডেটা স্থানান্তরের দক্ষতা ক্ষেত্রে ৭২.৭২% ও গতি উভয়ই কম থাকে। | ৫.এ পদ্ধতিতে ডেটা স্থানান্তরের দক্ষতা ক্ষেত্রে ৯৫.২৪% ও গতি উভয়ই বেশি থাকে।
|
প্রথম ও দ্বিতীয় অধ্যয়ের আরো কিছু প্রশ্ন
রোবটিকস বা রোবট কি?রোবটের গঠনগত উপাদানসমূহ কি কি?
ই-হেলথ কী? টেলিমেডিসিন একটি সেবা আলোচানা কর।
জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতাগুলি কি কি?
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে?
দুরশিক্ষণ বা ডিসট্যান্স লার্নিং
টেলি কনফারেন্স ও ভিডিও কনফারেন্স কী?
জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম কাকে বলে?
সাধারণত রোমিং বলতে আমরা কি বুঝি?
Bluetooth কী? ব্লুটুথ এর বৈশিষ্ট্য লিখ
তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতাগুলি কি কি?
ডেটা ট্রান্সমিশন মোড কি?
তৃতীয় অধ্যয়ের সকল প্রশ্নের উত্তর
দুই ও তিন চলকের ক্ষেত্রে ডি-মরগানের সুত্র দুটি ও তার প্রমান।
ফ্লিপ-ফ্লপ কি? ফ্লিপ-ফ্লপ এর প্রকার ও ব্যবহার
ওয়েব পেজে একটি ইমেজ যুক্ত করার ট্যাগসমূহ
হাইপারলিংক কি? হাইপারলিংক করার জন্য ট্যাগটি উদাহরণ সহ বর্ণনা
HTML এ ব্যবহৃত মৌলিক ট্যাগগুলি বা HTML এর মৌলিক কাঠামো
ওয়েব পেজে একটি ইমেজ যুক্ত করার ট্যাগসমূহ
ফরমেটিং ট্যাগ বলতে কাকে বলে? ফরমেটিং ট্যাগগুলি কি কি
সার্বজনিন গেট কি? বিভিন্ন গেটে পারস্পরিক বাস্তবায়ন দেখাও।
একটি টেবিল তৈরীর ট্যাগগুলি উদাহরণসহ বর্ণনা
HTML কী? HTML এর সুবিধা অসুবিধা লিখ।
পাবলিশিং এর ধাপসমূহ বর্ণনা কর।
অ্যাডার (Adder) কি? অ্যাডার কত প্রকার ও কি কি?
রেজিস্টার (Register) কি? রেজিস্টারের ব্যবহার এবং প্রকারভেদ।
লজিক গেট,বুলিয়ান এ্যালজেবরার ব্যবহারিক।। মৌলিক গেইটগুলোর বিস্তারিত বিবরণ।
No comments
Don't share any link