জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী,জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সুবিধা (advantages and disadvantages of genetic engineering, define genetic engineering)
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী,জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর গুরুত্ব
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং |
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংঃ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে কোন জীব কোষে নতুন DNA সংযোজন কৌশল। জীবদেহের কোনো কাষ থেকে একটি নির্দিষ্ট জীন বহনকারী DNA কে পৃথক করে অন্য জীবের কোষে স্থাপন ও কর্মক্ষম করার কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলে।
ব্যাখ্যাঃ জেনেটিক
শব্দের অর্থ জিন ও ইঞ্জিনিয়ারিং শব্দের অর্থ প্রকৌশলী। অতএব জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং শাব্দিক
অর্থ জিন প্রকৌশলী বা বংশগতি প্রযুক্তিবিদ্যা। জীবদেহের একসেট পূর্ণাংগ জিনকে জিনোম
বলা হয়। যে পদ্ধতিতে কোন জীবের জিনোমে নতুন জীন যোগ করে বা কোন জিন অপসারণ করে বা পরিবর্তন
করে প্রানীর বংশগত বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন সাধন করা হয় তাকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা
জিন প্রকৌশলী বলে। বিজ্ঞানী পল বার্গকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক বলা হয়।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং(genetic engineering) |
পদ্ধতিঃ জিনই হল কোন জীবের বংশতির ধারক ও বাহক। প্রাণী ও উদ্ভিদ কোষের নিউক্লিয়াসে বিশেষ কিছু পেঁচানো বস্তু আছে যাকে ক্রোমোজোম বলে। এই ক্রোমোজোমের মধ্যে কিছু বস্তু থাকে যাকে DNA (Deoxyribo Nucleic Acid) বলে। এই DNA এর এক একটি অংশকে বলা হয় জীন (Gene)| মানুষের শরীরে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম রয়েছে, বিড়ালের ২৪ জোড়া, মশার ৬ জোড়া ক্রোমোজোম রয়েছে । এর মধ্যে এক জোড়া ক্রোমোজোম থাকে যা আমাদের বংশগতির ধাারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে। আমাদের শরীরে প্রায় ৩ লক্ষ জীন আছে। একসেট পূর্ণাংগ জীনকে জীনোম বলা হয়। সাধারণত জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রথমে একটি জিনোমকে অপসারণ করা হয়। অতঃপর নতুন একটি জিনোমকে প্রতিস্থাপন করা হয়।
রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তি: জীবের কাংখিত বৈশিষ্ট্য বহনকারী DNA কে নির্বাচন করে নির্বাচিতউঘঅ হতে সুবিধামত DNA অংশটি কেটে নিতে হয়। কর্তনকৃত উঘঅ
খন্ডে লাইগেজ এনজাইম প্রয়োগ করে প্লাজমিড DNA এর যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই পরিবর্তনকৃত
প্লাজমিড DNA কে রিকম্বিনেন্ট DNA বলে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ধাপগুলো হলো-
* সর্বপ্রথমে
যে জিনটি দ্বাারা জীবের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করা হবে সেটা সনাক্ত করা ও আলাদা করা,
* একটি DNA এর জিন অন্য একটি জিনে প্রতিস্থাপন করা হয়। এটি দুটি উপায়ে করা হয় একটি নিয়ম না মেনে
দৈবচয়ন পদ্ধতিতে এবং অন্যটি DNA টি একটি নির্দিষ্ট স্থানে প্রতিস্থাপন করা হয়।
* তাপ ও
ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে একটি DNA কে একটি ব্যাক্টেরিয়া কোষে প্রবেশ করানো হয়। বিভিন্ন প্রাণীতে
DNA সমূহ মাইক্রো ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রাণী কোষের নিউক্লিয়াসে
প্রবেশ করানো হয়।
* যে DNA নতুন জিনকে তৈরি করবে
তাকে একটি ব্যাক্টেরিয়াতে রুপান্তরিত করা হয়। অত:পর উক্ত ব্যাক্টেরিয়া জীবের মধ্যে
এক ধরনের টিউমার তৈরি করবে এবং তা থেকে প্রাকৃতিকভাবে নতুন (Genetically
Modified Organism) তৈরি হবে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
এর ব্যবহারঃ
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মূলতঃ উন্নত বৈশিষ্ট্যধারী উদ্ভিদ ও প্রাণী
তৈরিতে কাজ করে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে নতুন কোনো প্রজাতি তৈরিকে বলা হয়
GMO (Genetically
Modified Organism)। নিন্মে
বিভিন্ন ক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার আলোচনা করা হলো।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংঃ রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তি
ব্যবহার করে ইনসুলিন উৎপাদন হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর বড় সুফল। এর ফলে বানিজ্যিকভাবে
ইনসুলিন তৈরি হচ্ছে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় ইনসুলিন ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে E-coli ব্যাক্টেরিয়া থেকে
ইনসুলিন তৈরি, ঈস্ট থেকে হরমোন তৈরি করা হয় । এছাড়াও হিউম্যান গ্রোথ হরমোনজনিত বামনত্ব
রোধ করা, পোড়া ত্বক, ফেটে যাওয়া হাড়, খাদ্যনালীর
আলসারের চিকিৎসা করা হয় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে এইডস, ক্যান্সার,
হাঁপানী, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ভাইরাসনাশক এক ধরণের রস তৈরি করা হচ্ছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে
তৈরী হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও অনুজীব থেকে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
এর ফলে জৈব কারখানায় প্রচুর পরিমান প্রোটিন ও এনজাইম উৎপাদন করা হয়। এগুলো প্রচুর সংখ্যায়
ট্রিপটোফেনের মতো টীকা ও সম্পুরক ঔষধ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।
কৃষি ক্ষেত্রে জেনেটিক
ইঞ্জিনিয়ারিংঃ বর্তমান কৃষি
ক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর অবদান অনস্বীকার্য। রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তি ব্যবহার করে অধিক উৎপাদনশীল
ফসলের জাত তৈরি, উন্নতমানের সার বীজ উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো ও কৃষিদ্রব্যের
গুনগত মান বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
ব্যবহার করছে। ধান, পাঠ, আখ, বিভিন্ন ফল ইত্যাদির বৈশিষ্ট্য সমুন্নত রেখে কিভাবে অধিক
উৎপাদন বা স্বাদ বাড়ানো যায় সেজন্য জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার হয়। বাংলাদেশে জেনেটিক
ইঞ্জিনিয়ারিং এর সেরা সাফল্য হলো পাটের জীবন রহস্য বা জিনোম সিকোয়েন্সের আবিষ্কার।
টিস্যুকালচার ব্যবাহার করে পাতা থেকে গাছ তৈরী অথবা প্রাণীদেহের বিশেষ কোষগুচ্ছ থেকে
কোন অংগ তৈরী করা হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে। এছাড়াও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
এর মাধ্যমে স্যামন মাছের জিন স্থানান্তরের মাধ্যমে তেলাপিয়া, মাগুর, কার্প ইত্যাদি
মাছের আকৃতি অনেক বড় করা সম্ভব হচ্ছে।
আরো কিছু প্রশ্ন
রোবটিকস বা রোবট কি?রোবটের গঠনগত উপাদানসমূহ কি কি?
ই-হেলথ কী? টেলিমেডিসিন একটি সেবা আলোচানা কর।
জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতাগুলি কি কি?
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে?
দুরশিক্ষণ বা ডিসট্যান্স লার্নিং
টেলি কনফারেন্স ও ভিডিও কনফারেন্স কী?
জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম কাকে বলে?
সাধারণত রোমিং বলতে আমরা কি বুঝি?
বেশ ভাল
ReplyDelete