ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী?(What is Virtual reality?) ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য (what are characteristics of virtual reality?

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) কী? প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব বর্ণনা কর। (What is the effect and importance of virtual reality)

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR): বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবে চেতনা উদ্যোগকারী বা বিভ্রম সৃষ্টিকারী কল্পনা নির্ভর বিষয় অনুভব করার ত্রিমাত্রিক অবস্থা উপস্থাপন করাই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভব বাস্তবতা বলে যেখানে সিমুলেটেড (অনুকরণীয়) পরিবেশ তৈরি হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যাখ্যা: ভার্চুয়াল শব্দের অর্থ হচ্ছে কল্পনা ও রিয়েলিটি শব্দের অর্থ হচ্ছে বাস্তবতা। অর্থাৎ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হল কল্প বাস্তব। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এমন এক সিস্টেম যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে সিমুলেশনের মাধ্যমে কাল্পনিক বিষয়বস্তুকে বাস্তবরুপে উপস্থাপন করা যায়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পদ্ধতি: ত্রিমাত্রিক ইমেজ তৈরীর মাধ্যমে অতি অসম্ভব কাজও সম্ভবপর করে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে প্রবেশের জন্য ব্যবহারকারীকে মাথায় বিশেষ সংবেদশীল হেলমেট, চোখে বিশেষ সানগ্লাস, হাতে বিশেষ গ্লোবস ও পায়ে বিশেষ যন্ত্রপাতি সম্পন্ন জুতা পরতে হয়। এগুলো পরে কম্পিউটার মনিটরের সামনে বসে কোন বিশেষ দৃশ্য দেখলেই সেটি বাস্তবে দেখছি বা করছি এরুপ অনুভব করে। হেডফোনের মাধ্যমে শব্দও শুনতে পায়। এভাবে সে কল্পনার সাথে বাস্তব অনুভুতির একাত্ব হয়ে যায়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি তৈরির প্রোগ্রামসমূহ হল C++, Perl, Java, Python ইত্যাদি।

How does virtual reality work?

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগক্ষেত্র: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগক্ষেত্র হলো যুদ্ধের প্রশিক্ষণ, বিমান চালনা প্রশিক্ষণ, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ড্রাইভিং, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেমস, বিভিন্ন চমকপ্রদ স্থানে ভ্রমন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, মহাকাশ পর্যবেক্ষণ, মেডিকেল চেকআপ ও চিকিৎসা, পন্যদ্রব্য প্রদর্শনী ইত্যাদি।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্যঃ

১) ব্যবহারকারী কোন শারিরীক ঝুঁকি ছাড়াই বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

২) এর সাহায্যে কোন দৃশ্য দেখা, শোনা ও অনুভব করা যায়।

৩) কিছু নির্দিষ্ট যন্ত্রে সজ্জিত একজন মানুষ পুরেপুরি ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড বা কল্পনা জগতের স্বাদ গ্রহন করতে পারে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কত প্রকার ও কি কি?

আমাদের আশেপাশের পরিবেশ, পরিস্থিতি, চিন্তা ভাবনা ইত্যাদি কল্পনার জগতে রূপান্তরের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে ৫ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

Fully-immersive

Semi-immersive

Non-immersive

Augmented Reality

Collaborative VR

Fully-immersive

Fully-immersive ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে থাকা অবস্থায় কোন ব্যক্তি সম্পূর্ণ বাস্তবানুক অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকে, যা প্রাকৃতিক জগত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

শুধু ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপস্থিতিতে একজন ব্যক্তি যা দেখে, যা করে তা সব কিছুই শারীরিক ও মানসিক ভাবে সত্য বলে মনে হবে। Fully-immersive এমন একটি virtual world যেখানে সামনা সামনি সাগরের গভীরে হাঙ্গরের খেলা করা কিংবা বাঘের পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানো সব কিছু সম্ভব ।

Semi-immersive

Non-immersive ও Fully-immersive ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মিলে তৈরি হয়েছে Semi-immersive ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। বিভিন্ন ধরনের device যেমন computer screen বা VR box, Headset এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ভার্চুয়াল জগতে হারিয়ে যেতে পারে। কম্পিউটারে থাকা মাউস ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার আচরণ (movement ) নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।

Types of virtual reality

Non-immersive

বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার দ্বারা character এবং activities নিয়ন্ত্রন করার প্রক্রিয়াকে বলে Non-immersive ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। Non-immersive ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য হলো সরাসরি ভার্চুয়াল জগতের পরিবেশের সাথে না থেকে কোন ব্যক্তি এটা উপভোগ ক্রতে পারে।

যেমনঃ ভিডিও গেম, গ্রাফিক্স অ্যানিমেশন ইত্যাদি।

Augmented Reality

একজন ব্যক্তি তার অফিসকে সুন্দরভাবে সাজাতে চাই এজন্য কোন একটি ফার্নিচারের দোকানে গিয়ে সেখানে বসে ফার্নিচার গুলো অফিস কক্ষগুলো সাজিয়ে দেখতে পারে কোথায় কোন জিনিস টা মানান সই দেখাচ্ছে। যে প্রক্রিয়ায় এটা সম্ভব সেটাই হল Augmented Reality। বর্তমানে অনেক টিভি সিরিয়ালে Augmented Reality বহুল ব্যবহার দেখা যায়।

Collaborative VR

বর্তমানে বিভিন্ন জনপ্রিয় গেম যেমন “PUBG” খেলা কালিন সময়ে কোন ব্যক্তি অন্যান্যদের সাথে এক আধুনিক ভার্চুয়াল রিয়েলিটি তে প্রবেশ করতে পারে যেখানে খেলোয়ারা তাদের ইচ্ছে মত গেমিং ক্যারেক্টার গুলোকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। গেম খেলার পাশাপাশি তারা তাদের “Headset”, Microphone, এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে কথাও বলতে ও শুনতে পারে আবার চ্যাটিং ও করতে পারে। Collaborative VR তে projected virtual character হিসেবে আমরা ভার্চুয়াল জগতের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারি।

প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাবঃ

ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষাঃ ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় যাদুঘরে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ হচ্ছে।

যুদ্ধ ক্ষেত্রেঃ একটি যুদ্ধক্ষেত্রে কীভাবে যুদ্ধ করতে হবে তার প্রশিক্ষণ বাস্তবে প্রদান করা কঠিন। কিন্তু ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে খুব সহজে এবং কম খরচে করা যায়। সামরিক বাহিনির প্রশিক্ষণে ও জ্ঞানের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নতুন দ্বার তৈরি করেছে।

চিকিৎসা ও গবেষণা ক্ষেত্রেঃ এই প্রযুক্তিতে সিমুলেশনের মাধ্যমে জটিল সার্জারি, রোটিক সার্জারি ইত্যাদি কাজ অত্যন্ত সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। গবেষণা ক্ষেত্রেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সিমুলেশনের সাহায্যে প্রচুর সুবিধা প্রদান করছে।

শিক্ষাক্ষেত্রেঃ সহজে পাঠদান, বিজ্ঞানের বিভিন্ন জঠিল সমীকরণ, ত্রিমাত্রিক গ্রাফ চিত্র উপস্থাপন, ভার্চুয়াল ক্লাসরুম তৈরির মাধ্যমে দুরবর্তী স্থান থেকেও পাঠদান, এছাড়া বিভিন্ন প্রশিক্ষণ যেমন গাড়ি চালনা, বিমান চালনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার হয়।

ড্রাইভিং প্রশিক্ষণঃভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ একটি অত্যন্ত সহজ ও ঝুঁকিমুক্ত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে সহজেই ড্রাইভিংয়ের নিয়ম কানুন আয়ত্ত করা যায়।

বিনোদন ও সংস্কৃতিঃ বর্তমান ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব শিল্পকলা, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, সায়েন্স ফিকসন্স ইত্যাদি ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায়।

খেলাধুলা: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে নির্মিত বিভিন্ন ধরণের কার্টুন, বিভিন্ন ধরনের গেমস সব শ্রেণীর মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। যেমন- ভার্চুয়াল 3D গেমস এতটাই আকর্ষণীয় যে এতে শিশু-কিশোররা সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ে।

ব্যবসা বানিজ্যঃ ব্যবসা বানিজ্যেও ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা. কর্মিদের প্রশিক্ষণ, উৎপাদিত পন্যেও চাহিদা ও সাম্ভাব্যতা যাচাই, প্রতিযোগীতামূলক বাজার সৃষ্টি প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব লক্ষণীয়।