তারবিহীন বা ওয্যারলেস কমিউনিকেশন ব্যবস্থা (Types and Definition of Wireless Communication System)
তারবিহীন বা ওয্যারলেস কমিউনিকেশন কি এবং এর ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা (Uses and Definition Of Wireless Communication System with Importance and advantages)
তারবিহীন বা ওয্যারলেস সিস্টেম
ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক ওয়েভ ব্যবহার করে ডেটা সিগনালকে স্থানান্তর করতে যে মাধ্যম ব্যবহৃত হয় তা Wireless বা তারবিহীন মাধ্যম নামে পরিচিত। তারবিহীন মাধ্যমে তিন ধরনের ওয়েব ব্যবহার হয়ে থাকে-
Components of wireless communication system |
রেডিও ওয়েব বা বেতার তরঙ্গ
ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক স্পেকট্রামে 10KHz থেকে 1GHz
ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জের সিগনালকে রেডিও ওয়েভ বলা হয়। এই তরঙ্গ যেকোন বাধা ভেদ করতে পারে। Bluetooth, Wifi, WiMax এর ক্ষেত্রে রেডিও ওয়েভ ব্যবহৃত হয়।
Radio wave |
রেডিও ওয়েব বা বেতার তরঙ্গ ব্যাখ্যা
রেডিও ওয়েভ সিগনালের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি অমনিডিরেকশনাল অর্থাৎ সিগনাল সবদিকে প্রবাহিত হয় এবং চলার পথে প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা ভেদ করতে পারে।এর গতিবেগ প্রায় 24 Kbps (Kilo byte
per second)|
রেডিও ওয়েব বা বেতার তরঙ্গ ব্যবহার
রেডিও ওয়েভ মাল্টিকাস্ট কমিউনিকেশন যেমন রেডিও, টিভি, পেজিং সিস্টেম ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।
মাইক্রোওয়েভ
মাইক্রোওয়েভ বলতে ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ওয়েবকে বুঝায়। ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক স্পেকট্রামে 1GHz থেকে 300GHz ফ্রিকোয়েন্সি পর্যন্ত সিগনালকে মাইক্রোওয়েভ বলা হয়। যা কোনো বাধা অতিক্রম করতে পারে না।
Microwave |
মাইক্রোওয়েভ ব্যাখ্যা
মাইক্রোওয়েভ সিগনাল এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এই ওয়েভ গুলো ইউনিডিরেকশনাল হয় অর্থাৎ সিগনাল যে কোন এক দিকে প্রবাহিত হয়, তবে বাঁকা পথে চলতে পারে না এবং চলার পথে প্রতিবন্ধকতা থাক
মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার
মাইক্রোওয়েভ ইউনিকাস্ট কমিউনিকেশন যেমন সেলুলার টেলিফোন, স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক এবং Wireless LAN
ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।
মাইক্রোওয়েভ দুই রকমের হতে পারে, যথা টেরেস্ট্রিয়াল ও স্যাটেলাইট।
টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ
টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ পদ্ধতিতে ভূপৃষ্ঠেই ট্রান্সমিটার ও রিসিভার বসানো হয়। এই সিগনাল যেহেতু কোনক্রমেই এর মধ্যের বাধা অতিক্রম করতে পারে না এবং বাঁকা পথে যেতে পারে না তাই
প্রতি ২৫/৩০ মাইল পরপর অনেক উঁচু করে ট্রান্সমিটার ও রিসিভার স্থাপন করা হয়। । এটি মেগাহার্টজ সীমার নীচের দিকের ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করা হয়। ট্রান্সমিটার ও রিসিভার একই দৃষ্টি রেখায় যোগাযোগ করে থাকে। যেমন মোবাইল টাওয়ার।
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তিতিতে যোগাযোগ উপগ্রহের সহযোগিতা নিতে হয়। এ প্রযুক্তিতে ভু-পৃষ্ট থেকে ৩৬০০০ কি.মি. বা ২২০০০ মাইল উপরে স্যাটেলাট বা কৃত্রিমউপগ্রহ বসানো হয়। এটি পৃথিবীর ঘুর্ণন গতির সাথে মিল সমান গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। প্রেরক যন্ত্র সেকেন্ডে প্রায় ৬০০ কোটি বা তার কাছাকাছি বার কম্পন বিশিষ্ট মাইক্রোওয়েভ সংকেত উপগ্রহে পাঠায়। উপগ্রহে পৌছানোর পর সংকেতগুলি অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে পড়ে। উপগ্রহে অবস্থিত অনেকগুলি ট্রান্সপোন্ডার উক্ত সংকেতগুলিকে বিবর্ধিত করে পৃথিবীর গ্রাহক যন্ত্রে ফেরত পাঠায়। এর ইলেক্ট্রনিক সার্কিট গুলিকে চালানোর জন্য সোলার সেল ব্যাটারি থাকে।
ইনফ্রারেড
এ প্রযুক্তিতে সিগনাল ট্রান্সমিট করার জন্য ইনফ্রারেড মানের আলো LED বা ILD ব্যবহার করা হয়। এর ফ্রিকোয়েন্সি সীমা 300GHz থেকে 1THz টেরা হার্টজ হয়ে থাকে। এর ট্রান্সমিট সিগনাল সর্বোচ্চ ৩০ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে যা ব্লু-টুথের চেয়ে কম। টিভির রিমোট কন্ট্রোল, ওয়ারলেস কীবোর্ড, মাউস ইত্যদিতে ইনফ্রারেডের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে তথ্য পাঠানোর জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ইনফ্রারেড।
Infrared Wireless Communication |
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার.
তারবিহীন যোগাযোগব্যবস্থাকে Wireless কমিউনিকেশন সিস্টেম বলে। অর্থাৎ যে যোগাযোগব্যবস্থায় কোন ক্যাবলের সংযোগ ছাড়াই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে, অর্থাৎ এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডাটা বা ফাইল স্থানান্তর বা রির্সোস শেয়ারিং এর কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় তাকে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম বলে।
নিম্নলিখিত মাধ্যমে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সম্পন্ন হয়-
১. রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি কমিউনিকেশন।
২. মাইক্রোওয়েভ কমিউনিকেশন।
৩. ইনফ্রারেড শর্ট রেঞ্জ কমিউনিকেশন। যেমন- রিমোট কন্ট্রোল।
ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তা
১.ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
২.ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মহাকাশে সফল অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব।
৩.ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কে নয়েজের প্রভাব কম থাকে।
৪.এতে কোন ক্যাবল স্থাপন করতে হয় না বলে খরচ কম হয় এবং ক্যাবল চুরির ভয় থাকে না।।
৫.একটি মডেম ব্যবহার করে বা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যে কোন সময় যে কোন স্থানে বসে নেটওয়ার্কিং কাজ সম্পন্ন করা যায়।
৬.নেটওয়ার্কের NIC card (modem)
portable. এবং নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার mobility সম্ভব।
ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং এর সাধারণ ব্যবহার
·
স্মার্ট ফোন, পিডিএ, ট্যাব, ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহারকারীগণ যারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণ করেন।
·
হাই স্পিড ইন্টারনেট সংযোগের জন্য এবং মোবাইল নেটওয়ার্কসমূহ যা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংযুক্ত।
ওয়্যারলেস প্রযুক্তির প্রয়োগ
মোবাইল টেলিফোন,ওয়্যারলেস ডেটা কমিউনিকেশন যেমন- ওয়াই-ফাই, সেলুলার ডেটা সার্ভিস, মোবাইল স্যাটেল্যাইট কমিউনিকেশন ইত্যাদি, কম্পিউটার ইন্টারফেস ডিভাইস, কনজুমার ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যেমন- টেলিভিশন, ডিভিডি ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
আরো কিছু প্রশ্ন
রোবটিকস বা রোবট কি?রোবটের গঠনগত উপাদানসমূহ কি কি?
ই-হেলথ কী? টেলিমেডিসিন একটি সেবা আলোচানা কর।
জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতাগুলি কি কি?
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে?
দুরশিক্ষণ বা ডিসট্যান্স লার্নিং
টেলি কনফারেন্স ও ভিডিও কনফারেন্স কী?
জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম কাকে বলে?
সাধারণত রোমিং বলতে আমরা কি বুঝি?
No comments
Don't share any link