ক্রায়োসার্জারি মানে কি? ( What is Cryosurgery?)
ক্রায়োসার্জারি বলতে কি বোঝ? What do you know about cryosurgery?
ক্রায়োসার্জারি: ক্রায়োসার্জারি
হলো এক প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে শরীরের কোন অস্বাভাবিক ও রোগাক্রান্ত টিস্যুকে
অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে রক্তপাতহীন অপারেশান করা হয়।
ব্যাখ্যা: গ্রিক
শব্দ cryo এর অর্থ
খুব শীতল এবং surgery এর অর্থ
শল্য চিকিৎসা বা হাতের কাজ। ক্রায়োসার্জারি কোন স্থান শীতল করে শল্য চিকিৎসা। এক্ষেত্রে
অত্যন্ত শীতল তাপমাত্রায় কোষকলার অভ্যন্তরে ছোট ছোট বরফের কৃষ্টাল তৈরি করে আক্রান্ত
কোষগুলি ধ্বংস করে ফেলে। এ পদ্ধতিতে কোন রক্তপাত হয় না।
চিকিৎসা পদ্ধতি: শরীরের
অস্বাভাবিক ও রোগাক্রান্ত টিস্যু চিহ্নিত করে তার ভিতর ক্রায়োপ্রব (Cryoprobe) অর্থাৎ একটি ফাঁপা সুঁচ জাতীয় যন্ত্র দিয়ে তরল নাইট্রোজেন বা
আর্গন গ্যাস প্রবেশ করানো হয়। ফলে উক্ত কোষের তাপমাত্রা ১২ সেকেন্ডের মধ্যে -১২০থেকে
-১৬৫০ সে. এ নেমে যায়। অত্যাধিক তাপমাত্রা হ্রাসের ফলে কোষটি একটি বরফ পিন্ডে পরিনত
হয় এবং কোষের ভিতর রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় ফলে কোষটির ক্ষতি সাধিত হয়
এবং ধ্বংস হয়। এরপর পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য রোগাক্রান্ত
কোষের ভিতর পুনরায় ক্রায়োপ্রব (Cryoprobe) দিয়ে হিলিয়াম গ্যাস নিঃসরণ করা হয়।
এর ফলে তাপমাত্রা ২০০ থেকে ৪০০ সে. বেড়ে যায় এবং বরফ গলে স্বাভাবিক পর্যায়ে আসে। ক্রায়োপ্রব
(Cryoprobe) হল একটি ফাঁপা সুঁচ জাতীয় যন্ত্র যেমন
ইনজেকশনের সুঁচ দিয়ে কোষের ভিতর তরল গ্যাস স্প্রে করা। এটি চিকিৎসা জগতের একটি সফল
ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি সম্পুর্ণ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর।
কিছু কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে যেখানে প্রকৃতপক্ষে হাতে কলমে
কাজ করা প্রায় অসম্ভব। যেমন- পেটের নাড়ির ভিতরের ক্ষত, চোখের ভেতরের ক্ষত, জরায়ুর ক্ষত,
মস্তিষ্কের ভেতরের ক্ষত ইত্যাদি। এক্ষেত্রে সিমুলেটেড সফটওয়ারের মাধ্যমে আক্রান্ত কোষগুলোর
যথাযথ অবস্থান সনাক্ত করে এবং এর সীমানা নির্ধারণ করা হয় অথবা এর ত্রিমাত্রিক বা বহুমাত্রিক
ছবি তৈরী করে সফলভাবে চিকিৎসা করা হয়।
ক্রায়ো সার্জারিতে ব্যবহৃত গ্যাস সমূহ তরল নাইট্রজেন, আর্গন,
হিলিয়াম, প্রপেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, তরল অক্সিজেন ইত্যাদি
ক্রায়োসার্জারির
সুবিধাঃ এ পদ্ধতি রক্তপাতহীন, ব্যাথা কিংবা অপারেশনজনিত সমস্যা অনেক
কম। চিকিৎসা ব্যায়ও তুলনামূলক অনেক কম ও কোন কোন ক্ষেত্রে হাসপাতালে থাকারও প্রয়োজন
হয় না।
ক্রায়োসার্জারির
অসুবিধাঃ রোগের অবস্থান ঠিকমত সনাক্ত না করা গেলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা
দিতে পারে এবং টিউমার অপারেশনের ক্ষেত্রে ক্যান্সার কোষ ছড়িয়ে যেতে পারে।
ক্রায়োসার্জারির
ব্যবহারঃ ত্বকের ছোট টিউমার, তিল, আঁচিল, মেছতা, চর্ম ক্যান্সার, ওরাল
ক্যান্সার, বোন ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, প্রোস্টেড গ্লান্ড ক্যান্সার, লাঞ্চ ক্যান্সার
পেটের নাড়ির ভিতরের ক্ষত, চোখের ভেতরের ক্ষত, জরায়ুর ক্ষত, মস্তিষ্কের ভেতরের ক্ষত
ইত্যাদি চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়।
ক্রায়োসার্জারি কি ব্যাখ্যা কর।
ReplyDelete